দেবাশীষ চক্রবর্তী

চাপা কান্না

চাপা কান্না
দেবাশীষ চক্রবর্তী
সে কাঁদবে কার কাছে?
তার কান্না শোনার আগেই মা চলে গেছে।
বাবা তার শিকড় উপড়ে দিয়ে
ডিঙি নিয়ে ভেসে গেছে তরুণীর বিছানো শরীরে।
সে কাঁদবে কার কাছে?
কৈশোরে রাতুলদা এসেছিল—
ভেবেছিল নির্জনে নৈঃশব্দের রুপোর থালায়
জমানো কান্না সাজিয়ে তাকে দেবে।
এক অলস দুপুরে ফাঁকা ঘরে
ভরসা যখন উড়ছিল জোনাকির মতো
রাতুলদা বলল, ফ্রকটা খোল,
তোর বুকের ভিতর জমে থাকা দুঃখগুলো
আমি মুঠো ভরে তুলে আনতে চাই—
সে কাঁদবে কার কাছে?
স্কুলে রত্নাদি খুব ভালবাসতেন,
ভেবেছিল তাঁর কাছে কান্নার ঝুলি উপুড় করে দেবে
একদিন শুনল, রত্নাদি ফিসফিস করে বলছেন,
ওকে সরস্বতীর জোগাড় করতে দিস না।
সে দয়া চায়নি কখনও, তার কোনো বন্ধু নেই,
সহপাঠীরা ঠৌঁট বেঁকিয়ে হাসে।
সে কাঁদবে কার কাছে?
বিয়ের পর বরের সামনে একরাতে চোখ ভিজল,
ভাবল, সব কান্না একরাতেই খরচ করে দেবে।
শুনতে পেল কর্কশ তিক্ত তাচ্ছিল্যের স্বর,
এই ন্যাকামির কোনো মানে হয় না, সব জেনেও
তোমাকে বিয়ে করেছি, তাও কান্না? হাসো— হাসো—
সে কাঁদবে কার কাছে?

দেবাশীষ চক্রবর্তী

দেবাশীষ চক্রবর্তী

Leave a Reply