দুঃখিনীর শেষ নিঃশ্বাস
মোঃ বাকি বিল্লাহ
সেইদিন রাত জেগে দিয়েছিলাম পাহারা
তাকে, তিনি ছিলেন অসুস্থ পথহারা।
একদিন আগেও শুনেছি যার মুখে কথা,
পানি পান করতো ; তার পেটে ছিল ব্যাথা।
অনেক দিন ভুগেছেন-সে অসহ্য যন্ত্রনায়,
কিছু দিন শক্তি ছিল না, ছিলেন বিছানায়।
যেদিন আসিয়া ছিলেন প্রান বিনাশকারী,
পাড়াপড়শি আত্মিয় দাঁড়িয়ে ছিল সারি।
সকাল থেকে ঘরে লোকজন আসছে আর যাচ্ছে,
সকলের মুখে কালেমার ধ্বনি, সে শুনতে পাচ্ছে।
অবশ শরীর শুধু আঁখি দুটো খোলা,
এমন সময় বিভোর সবাই যেন পথভোলা।
মৃত যাত্রীর নাড়িছিন্ন ধনের মলিন মুখ,
এদিক ওদিকে ঘুরে কোথাও নেই সুখ!
সুখ কেমনে থাকে মমতাময়ী মা মৃত যাত্রী,
কয়েক মাস ভুগছেন যন্ত্রনায় দিবস রাত্রি।
সকলের মুখে দুঃখের ছাপ নেই কোনো শান্তি,
নাওয়া-খাওয়া-ঘুম নেই, আছে শুধু ক্লান্তি ।
সকাল গড়িয়ে পার হয়ে যায় যে দুপুর অবিরাম,
মাথার কাছে বসে কুরআন তিলাওয়াত সপিলাম।
ঘরে নারীদের কান্না, মুখে কালেমার সুর,
সব হতাশ এই বুঝি প্রান যায় বহু দূর।
প্রান বিয়োগের সময় কিছু মানুষের মত,
চোখ-মুখে ভয়ংকর আকৃতির ছাপ নেই তত।
শিশু মায়ের কোলে ঘুমিয়ে যায় যেমন,
আমি দেখেছি মাকে ঘুমাতে তেমন।
অবলা নারী চিৎকার মারি কেঁদে উঠলো,
কষ্ট চাপিয়ে শান্তনার বোল যে ফুটলো।
আজ কেউ কাঁদবে না,চিৎকার মারবে না এই ঘরে,
কষ্ট দিবে না, দোয়া কর , বলি সকলের তরে।
‘ইয়াসিন সূরা’ পড়া হলো না পুরা, থামলো শ্বাস;
দুনিয়ায় চিরবিদায় নিল “দুঃখিনীর শেষ নিঃশ্বাস”।
কে শুনে কার কথা? কেঁদে যায় ব্যাথা জুড়ায়,
পারি না বলতে, না সইতে ভিতরে পোড়ায়।
এই নীতি-মানুষের রীতি মড়লে থাকে না,
একবার দেহ থেকে শ্বাস গেলে কেউ রাখেনা।
কিছুক্ষণ আগে জড়ানো ছিলো রঙিন শাড়ি,
পরাতে কাফন ব্যস্ত এখন তাড়াতাড়ি।
কেউ বাঁশ কাটতে, মাটি খুঁড়তে যায় গোরস্থানে;
না যায় পচে; তাই ব্যস্ত সব,তাকে প্রস্থানে ।
গোসল করালো কাফন পরালো তাড়াতাড়ি,
জানাজা দিয়ে যায় নিয়ে আপন বাড়ি।
যত দুঃখ-কষ্ট-যন্ত্রনা-অভিমান সবি হলো শেষ,
দুনিয়ার মায়া ছেড়ে নিদ্রায় আছে বেশ।
মাটির জায়গায় মাটি আর ঘরের জায়গায় ঘর,
স্বামী সন্তান আত্মীয় স্বজন সবাই হলো পর।
সবে কাঁদিয়ে চলে গেল নিয়ে সাথে দুঃখ!
কষ্ট করলো সারাজীবন পেলনা কভু সুখ।
Md Baki Billah