বসন্ত বিদায় নিয়েছে। যাবার বেলায় দোর গোড়ায় সে তার গতরাতের রুক্ষতা অবহেলায় ফেলে গেছে। পা বাড়িয়ে যখন উঠোনে নেমেছিল তখন উঠোন বাগানবিলাসের গোলাপী ফুলে ছেয়ে গেছে। কয়েক ঘন্টায় প্রকৃতির খেলায় বসন্ত অবাক হয়েছিল।
কাল মাঝরাতে হিমানী যখন বসন্তের ঘরে আলো জ্বেলেছিল, সে তখন দক্ষিনের জানালায় ঠায় দাঁড়িয়ে।
হিমানী বসন্তের কাঁধে হাত রেখে যখন জিজ্ঞেস করল
– এরপর?
বসন্ত বলেছিল “ভাবিনি। আর, কি জানো তো, ভাবতে চাইনা, সেটা ঠিক না। আসলে আমার ভাববার পরিধি টা এক ঝটকায় কমে গেছে! সেখানে কে যেন বেড়া দিয়ে রেখেছে। আমি চাইলেও সেই বেড়া টপকিয়ে তার আঙিনায় কড়া নাড়তে পারছিনা।”
এতটুকু বলে বসন্ত চুপ করল।
হিমানী কিছুক্ষন থেমে বলল “বসন্ত, তাকিয়ে দেখো, চাঁদ খানাও আজ রক্তিম বর্ন ধারন করেছে। যেন অভিমানের লালরক্ত তার সারা দেহে ছড়িয়ে পরেছে।”
বসন্ত বলেছিল “ওটা লাল নয়, ধূসর বর্ন। স্বচ্ছ নীল নভমণ্ডলে জীমূতের আগমনে চাঁদও আজ ধূসরে পরিণত।”
একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বসন্ত আবার বলল ” যে অন্তরাল সৃষ্টি হয়েছে, তা আমি মেনে নিতে চাইনি। কিন্তু মেনে নিলাম। তুমি উত্তরের বাগানবিলাসের পরিচর্যার খামতি রেখোনা। কোনোএকদিন ঠিক তাতে ফুলে ভরে উঠবে।”
এতক্ষন পর বসন্ত পিছন ফিরে হিমানীর দিকে তাকিয়ে বলল ” রাত হয়েছে। এরপর ও যদি জাগো তো চোখের নীচে কালি পড়বে। তুমি এসো এখন”।
তারপর অনেকগুলো মাস কেটে গেছে।
✒️ নী লা ঞ্জ ন |
নীলাঞ্জন