You are currently viewing ভোরের ডায়েরি

ভোরের ডায়েরি

ভোরের ডায়েরি
—দীপক বেরা

🍁
সাতসকালে বাড়ির বাইরে পা রাখি। পথ চলতে গিয়ে দেখি, বিক্ষুব্ধ মানুষের জটলা। বিক্ষিপ্ত কিছু ভয়ার্ত মানুষের চিৎকার। দূরে একটা রহস্য পোড়ানো ধোঁয়ার কুণ্ডলী জড়িয়ে পেঁচিয়ে উপরে উঠে যাচ্ছে!
বাঁকাচোরা অন্ধগলিতে ফিনকি দিয়ে রক্ত ছিটকে পড়ছে। এবাড়ি ওবাড়ির দেয়াল ঘেঁষে মিশে যাচ্ছে পচা নর্দমার জমা জলে। মণিবন্ধ ভেদ করে বর্শামুখ বরাবর একটা দীর্ঘ রেখা, —এখন শনির বলয় ছুঁয়ে রাহু-কেতুর মধ্যমাকে বিদ্ধ করে আছে।
প্রগতি, উন্নয়ন, সভ্যতা নামক আধুনিকমনস্ক প্রতিবেশীরা আড়াল খোঁজে। সম্প্রতি কারুর খুন হয়ে যাওয়ার রাজনীতির কথা, ওরা খুব সন্তর্পণে কানে কানে ফিসফিসিয়ে বলে। পথের কঙ্কাল যেন পথ আটকায়। শীতল জমাট ঘূর্ণির মধ্যে বিপদের আশঙ্কায় হোঁচট খেতে খেতে, এইসব আসা-যাওয়ার সাদা-কালো ছবি দেখি রোজ।

আমাদের আলোকশিখাগুলো ক্রমশ অন্ধকারে মিশে যাচ্ছে। আর অন্ধকার পাতলা গরল হয়ে চুঁইয়ে পড়ছে পোশাক থেকে পোশাকে, পোশাক থেকে জামার বোতামে। আর সেখানে উন্মত্ত কিছু মানুষের পাশবিক প্রবৃত্তি খুবলে খাচ্ছে চাঁদ। আমাদের যাবতীয় শিক্ষা-সংস্কৃতি, সৌন্দর্যবোধের কীর্তিস্তম্ভ ভেঙে পড়ছে। মনীষার আলো ও সকল চেতনার অবলুপ্তি ঘটে চলেছে এভাবেই, দিনরাত ..

এতকিছুর পরেও কিন্তু আবার একটা ভোর হয়! বিছানায় শুয়ে শুয়ে নতুন ভোরে আবার স্বপ্ন দেখে মন। এই উপত্যকা পেরিয়ে মানুষের বসতি থেকে অনেকটা দূরে— টিলার উপরে যেন একটা ঝুলন্ত ফুলের বাগান। সেখানে সূর্যের আলোয় ফুটে আছে রঙবেরঙের হরেক ফুল। আর সেখানে একটা পূর্ণবোধী বৃক্ষের নিচে জড়ো হয়েছে অসংখ্য রঙিন পাখি, প্রজাপতি আর ফড়িং!

রূপকথার ঘুম ভেঙে মনে হয়,.. হায়, এমন একটা স্বপ্ন দেখা ভোরের ঘুম কখনও না ভাঙতো যদি…

🍁
টালিগঞ্জ, কোলকাতা।
রচনাকাল > ২৩|০৫|২০২৩

inbound1011112834188279884.jpg

DIPAK BERA

Leave a Reply