আম্মাকে দু’বেলা কাঁদতে দেখেছি।আমি যখন অনেকদিন পর বাড়িতে যাই, তখন আম্মা চোখের জল মুছে আঁচল দিয়ে।আবার যখন বাড়ি থেকে শহুরে আসার জন্য নিজেকে ঘুছাই। ব্যাগে যখন এক এক জিনিস পত্র নিতে শুরু করি,তখন থেকে আমি খেয়াল করি আম্মার মুখ মলিন। আমি বুঝি।তবে কিচ্ছু বলতে পারি না।আবার ছোট বোনটাও ব্যাগের জিনিসপত্রগুলো এলোমেলো করে দেই।আমি আবার ঘুছিয়ে ব্যাগের চ্যাং বন্ধ করে রাখি।আমি কোনো দিন বাড়ি থেকে ঠিক টাইমে বের হতে পারি নি।হয়তো নিজের ইচ্ছাই,নয়তো আম্মা নয়তো আমাদের নওশীন এর জন্য। যেদিন শহুরে যাওয়ার কথা,সেদিন আমি যেতে পারি না।কারণ কোনো না কোনো একটা এক্সকিউজ দিয়ে আম্মা আমাকে আরও একটা দিন রেখে দিতে চাই।তবুও যে আমার ফিরতে হয়।তারপর সব ঘুছিয়ে যখন সেদিন বের হলাম— আম্মা তখন জড়িয়ে ধরে। আমি খেয়াল করলাম চোখের কোণায় খানিকটা জল।আমি আর বেশিক্ষণ না থেকে আম্মা আসি বলে বিদায় জানিয়ে বের হয়ে পড়লাম।পুরো রাস্তা, দুইশো সত্তর কিলোমিটার পথে আম্মা অনেকবার ফোনে খবরাখবর নিলেন।
আমি আরও অবাক হলাম,যখন কাউন্টারে এসে গাড়িতে উঠলাম।আধ বয়স্ক এক ভদ্র মহিলা তার সন্তানকে কোনো ভাবেই একা ছাড়ছেন না।ছেলেটাও বোধহয় আমার সমবয়সী হবে।গাড়ির হ্যালপারকে বারবার ডেকে এনে তার সন্তানকে গছিয়ে দিচ্ছেন।আমি দেখছি।তারপর আমি ভদ্রমহিলাকে বললাম আন্টি সমস্যা হবে না। কোথায় নামবে উনি।তখন উনি আমাকে বল্লেন— রাহাত্তার পুলে নামবে।আগে একবারও একা যায় নি।তাই চিন্তা হচ্ছে।আমি বললাম তাহলে আমার আগেই উনি নেমে যাবেন।সমস্যা হবে না।আমি মনে করাই দেবো।
এসব মায়ের আকুতি ভিষণ সুন্দর। আমাদের অনুপ্রেরণা দেই।কিভাবে মানুষদের আগলে রাখতে হয়— তার জ্যান্ত শিক্ষা দেই।
মা এমন।মা’রা এমন।
সীমান্ত হেলাল।