ক্লিওপেট্রা (Cleopatra)
মুহাম্মদ আস্রাফুল আলম (সোহেল)
সপ্তম ক্লিওপেট্রা থেয়া ফিলোপেটর (Cleopatra VII Philopator) ছিলেন মিশরের টলেমাইক রাজ্যের রানী (Queen of the Ptolemaic Kingdom) ৷ জন্ম: ৭০/৬৯ খ্রিস্ট পূর্ব, মৃত্যু : ১০ই আগস্ট ৩০ খ্রিস্ট পূর্ব, আলেকজান্দ্রিয়া, মিশর ৷
ইতিহাসে তিনি ক্লিওপেট্রা নামে পরিচিত ৷ তিনি ছিলেন প্রাচীন মিশরের টলেমাইক রাজবংশের সদস্য (Ptolemaic dynasty) ৷ এ রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা Ptolemy I Soter এর বংশধর ৷ Macedonian Greek General এবং প্রাচীন গ্রিক রাজ্য Macedon এর রাজা মহামতি Alexander the Great (২০/২১জুলাই ৩৫৬ খ্রিস্ট পূর্বাব্দ – ১০/১১জুন ৩২৩ খ্রিস্ট পূর্বাব্দ) এর সহচর ৷
ক্লিওপেট্রা তার নিজের সৌন্দর্য এবং রোম সাম্রাজ্যের সেনাপতি, একনায়ক Julius Caesar (গাইও জুলিও কায়েসার) এবং রোমান সেনাপতি, রাজনীতিবিদ Mark Antony (ইতালীয়: Marcus Antonius) এর সাথে তার প্রেমের সম্পর্কের জন্য ইতিহাসে বিশেষভাবে পরিচিত ৷
ক্লিওপেট্রা ছিলেন সর্বশেষ সক্রিয় ফারাও (Pharaoh) । ফারাও হচ্ছে গ্রিক এবং রোমানদের কর্তৃক মিশর বিজয়ের পূর্ব পর্যন্ত প্রাচীন মিশরীয় রাজবংশের রাজাদের প্রচলিত উপাধি । ফারাওগণ ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক নেতা ছিলেন । প্রাচীন মিশরে সাধারণত পুরুষরাই ছিলেন শাসক, কিন্তু খুবই বিরলভাবে মহিলা শাসকদের হ্মেত্রেও ফারাও শব্দটি বা উপাধি ব্যবহার হতো ।
প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতায় ফারাও জনগোষ্ঠী বিশ্বাস করতেন যে, মৃত্যুর পর তাদের আত্মা পৌরাণিক দেবতা Horus (হোরাস, হেরু, হোর, হার) এর আত্মার সাথে মিশে যাবে ৷ বাজপাখি (Falcon) দেবতা হিসেবে Horus পূজিত ছিলেন ৷ আকাশের দেবতা হিসেবে তাকে মান্য করা হতো । যার দু’চোখ ছিল চন্দ্র এবং সূর্য ৷ ফারাওগণ নিজেদেরকে সূর্যের বংশধর বলে মনে করতেন । তাই তারা নিজেদেরকে দেবতা ভাবতেন এবং নিজ বংশের বাইরে কাউকে বিবাহ করতেন না । এতে করে রক্তের বিশুদ্ধতা বজায় রাখার জন্য নিজ রক্তের ভাই-বোনেদের মধ্যেই বিবাহ সম্পন্ন হতো ।
এ বিবাহকে রক্ত সম্পর্কীয় বিবাহ (Consanguineous marriage) বলে ৷ ফারাওগণ বিশ্বাস করতেন যে, মৃত্যুর পরও তাদের জীবন রয়েছে । তাই তারা মৃত্যুর পর মরদেহকে পচন থেকে রক্ষা করতে মমি’র মাধ্যমে বিশেষ ব্যবস্থায় ও এর সাথে স্বর্ণালংকারসহ দৈনন্দিন জীবনের ভোগ-বাসনার প্রয়োজনীয় সকল সরঞ্জামকে বিস্ময়কর পিরামিড (Pyramid) তৈরি করে এর নিচে সমাধিকক্ষের শবাধারে সংরক্ষণ করতেন ।
নীল নদকে কেন্দ্র করে মিশরের সভ্যতা গড়ে উঠেছিল বলেই ইতিহাসের জনক (The Father of History), প্রাচীন পারস্যের অধিবাসী, গ্রিক ইতিহাসবিদ ও ভূগোলবিদ Herodotus (খ্রিস্ট পূর্ব ৪৮৪-৪২৫) মিশরকে “নীল নদের দান (Gift of the Nile)” বলেছেন ৷ ৫০০০-৩২০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দ পর্যন্ত সময়ের তৎকালীন মিশরকে প্রাক-রাজবংশীয় যুগ বলা হয়ে থাকে । Memphis বা Mem-nefer হচ্ছে প্রাচীন মিশরের Inebu-hedj এর রাজধানী ।৷
*তথ্যসূত্র: আন্তর্জাল (The Internet)
মুহাম্মদ আস্রাফুল আলম (সোহেল)