আমাদের সৌরজগতের বাইরে এক বহিঃসৌর মহাপৃথিবী (Super Earth Exoplanet) হচ্ছে TRAPPIST-1 b । এ পাথুরে গ্রহটি 2MASS J23062928-0502285 b নামেও পরিচিত । গত ০২রা মে, ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে Michaël Gillon et al প্রথম গ্রহটি আবিষ্কার করেন । পৃথিবী থেকে প্রায় ৪০.৭ আলোকবর্ষ (১২.৫ parsecs) দূরে Aquarius নক্ষত্রমণ্ডলের কুম্ভ রাশিতে এটি অবস্থিত
গ্রহটি পৃথিবীর চেয়ে প্রায় ৩৭% বেশি বৃহদায়তন এবং প্রায় ১২% বড় । TRAPPIST-1b গ্রহটির ভর, ব্যাসার্ধ এবং মাধ্যাকর্ষণ উভয় ক্ষেত্রেই পৃথিবীর সাথে অনেকটা মিল রয়েছে । এর ব্যাসার্ধ ১.১১৬ R, ভর ১.৩৭৪ M এবং প্রায় ১১০% পৃথিবীর পৃষ্ঠ মাধ্যাকর্ষণ । এটি পৃথিবীর চেয়ে প্রায় চারগুণ বেশি শক্তি গ্রহণ করে এবং সামান্য কম ঘন । একটি বায়ুমণ্ডলের উপস্থিতি অনুমান করে এর পৃষ্ঠের প্রাথমিকভাবে তাপমাত্রা: ৭৫০ কেলভিন (৪৭৭ °C বা ৮৯০ °F), ১৫০০ কেলভিন (১২৩০ °C বা ২২৪০ °F) এবং সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ২০০০ কেলভিন (১৭৩০ °C বা ৩১৪০ °F) । গ্রহটি শুক্র গ্রহপৃষ্ঠের চেয়ে অনেক বেশি গরম এবং সম্ভবত এ গ্রহের পৃষ্ঠটি গলিত লাভা’র কারণে যথেষ্ট গরম ।
TRAPPIST-1 b বহিঃসৌর গ্রহটি হচ্ছে TRAPPIST-1 নক্ষত্রের গ্রহতন্ত্রে পরিচিত সাতটি গ্রহের মধ্যে সবচেয়ে ভিতরে অবস্থিত । অভ্যন্তরীণ এ গ্রহটির একটি খুব বৃত্তাকার কক্ষপথও আছে যার উত্কেন্দ্রতা বা কেন্দ্রীয় দূরত্ব ০.০০৬২২, যেটি পৃথিবীর কক্ষপথের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি বৃত্তাকার ।
কক্ষপথের দূরত্ব পৃথিবীর তুলনায় একশত ভাগের মতো এবং পৃথিবী তার মূল বা কেন্দ্রীয় নক্ষত্র সূর্য থেকে যে পরিমাণ শক্তি পেয়ে থাকে তার প্রায় চারগুণ শক্তি এটি গ্রহণ করে । গ্রহটি ০.০১১ AU (১.৭২ মিলিয়ন কিলোমিটার বা ১.০৭ মিলিয়ন মাইল) দূরত্বে তার মূল বা কেন্দ্রীয় নক্ষত্র TRAPPIST-1 কে খুব কাছাকাছি প্রদক্ষিণ করে, পৃথিবী এবং সূর্যের মধ্যে দূরত্বের মাত্র ১.২% । একটি কক্ষপথ (বর্তনী বা আবর্তন) সম্পূর্ণ করতে মাত্র ৩৬ ঘন্টা বা প্রায় ১.৫১ পৃথিবী দিন সময় লাগে । Bruh বা কেন্দ্রীয় নক্ষত্রের নিকটবর্তী হওয়া অর্থ হচ্ছে TRAPPIST-1b গ্রহে সম্ভবত জোয়ার-ভাটা তালাবদ্ধ রয়েছে ।
যদিও গ্রহটি TRAPPIST-1 এর গ্রহতন্ত্রের বসবাসযোগ্য অঞ্চলের মধ্যে নয় । তবুও গ্রহের পর্যবেক্ষণগুলো থেকে এর ভাই-বোন গ্রহগুলোর পাশাপাশি অন্যান্য M-বামন নক্ষত্রগুলোর গ্রহতন্ত্র সম্পর্কেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে । ২০১৭ খ্রিস্টাব্দের গোড়ার দিকে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা পৃথিবী থেকে ৪০ আলোকবর্ষ দূরে একটি অতিশীতল লাল বামন (Ultracool Red Dwarf বা M dwarf) নক্ষত্রকে সাতটি পাথুরে গ্রহ প্রদক্ষিণ করে, এমন একটি আবিষ্কারের কথা জানিয়েছিলেন ।
ঐ বহিঃসৌর গ্রহগুলো সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে যে, আমাদের নিজস্ব সৌরজগতের অভ্যন্তরীণ পাথুরে গ্রহগুলোর আকার এবং ভরের সাথে তাদের মিল রয়েছে আমাদের সৌরজগতের যে কোনো গ্রহ সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার চেয়ে যদিও বহিঃসৌর গ্রহগুলো সকলেই তাদের মূল নক্ষত্রের অনেক কাছাকাছি প্রদক্ষিণ করে ৷ সকলেই বুধের কক্ষপথের মধ্যে আরামে মানানসই করতে পারে– তারা তাদের এ ক্ষুদ্র কেন্দ্রীয় বা মূল নক্ষত্র থেকে তুলনামূলক পরিমাণে শক্তি পায় ।
TRAPPIST-1 নক্ষত্র হচ্ছে একটি অতি শীতল লাল বামন (প্রয়াত M বামন) । যার ভর ০.০৮৯ সৌর ভর (M☉) (সূর্যের ভরের মাত্র ০.০৯ গুণ) এবং ০.১২১ সৌর ব্যাসার্ধ (R☉) । নক্ষত্রটির তাপমাত্রা ২৫৬৬ কেলভিন এবং ৩ থেকে ৮ বিলিয়ন বছরের পুরনো । সে তুলনায়, সূর্য ৪.৬ বিলিয়ন বছর পুরনো এবং সূর্যের তাপমাত্রা ৫৭৭৮ কেলভিন । ক্ষুদ্র বামন নক্ষত্রটি সূর্যের চেয়ে প্রায় ০.০০০৫ গুণ উজ্জ্বলতায় খুবই ম্লান বা অনুজ্জ্বল ৷ ১৮.৮০ আপাত মাত্রায় এটিকে খালি চোখে দেখা খুবই মূর্ছাপ্রবণ । এ নক্ষত্র তার কেন্দ্রে হাইড্রোজেন পোড়াতে সক্ষম । নক্ষত্রটি ধাতব সমৃদ্ধ, যার ধাতবতা ([Fe/H]) ০.০৪ বা ১০৯% সৌর পরিমাণ ।
বিশেষ করে এটি অদ্ভুত, কারণ বাদামী বামন এবং হাইড্রোজেন-অদৃশ্য বা উত্তাপে গলিয়া যাত্তয়া (Hydrogen-fusing) নক্ষত্রের মধ্যে সীমানার কাছাকাছি এ ধরনের কম ভরের নক্ষত্রগুলোতে সূর্যের তুলনায় যথেষ্ট কম ধাতব উপাদান রয়েছে বলে ধারণা করা হয় । এর দীপ্তি (L☉) সূর্যের ০.০৫২২% । TRAPPIST-1 System বা গ্রহতন্ত্রে পৃথিবীর মতো এ নক্ষত্রের চারপাশে মোট সাতটি বহিঃসৌর গ্রহ রয়েছে । তাদের মধ্যে তিনটি— TRAPPIST-1e, TRAPPIST-1f এবং TRAPPIST-1g তাদের মূল নক্ষত্র TRAPPIST-1 এর “বসবাসযোগ্য অঞ্চলে” (The TRAPPIST-1 Habitable Zone) বাস করে । যদিও TRAPPIST-1b, TRAPPIST-1c ও TRAPPIST-1d গ্রহগুলো TRAPPIST-1 নক্ষত্রের গ্রহতন্ত্রে সম্ভাব্য বাসযোগ্য অঞ্চলের খুবই কাছাকাছি এবং TRAPPIST-1h গ্রহটির অবস্থান অনেক দূরে । ২০১৮ খ্রিস্টাব্দে Spitzer Space Telescope দিয়ে TRAPPIST-1b বহিঃসৌর গ্রহের বায়ুমণ্ডল পরীক্ষা করা হয় । প্রকাশিত পর্যবেক্ষণগুলোতে দেখা যায় যে, গ্রহটির বায়ুমণ্ডল পৃথিবী ও শুক্রের তুলনায় অনেক বড় ।
বর্ণালিবীক্ষণ দ্বারা নিশ্চিত করে গ্রহটির তুলনামূলকভাবে কম ঘনত্ব, অত্যন্ত পুরু, সম্ভাব্যভাবে CO2 সমৃদ্ধ, জলীয় বাষ্পযুক্ত এবং সালফিউরিক এসিড মেঘ গঠনের কারণে খুবই গরম বায়ুমণ্ডল রয়েছে । একই বছর ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত আরেকটি গবেষণায় দেখা যায়, TRAPPIST-1b গ্রহে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের পৃষ্ঠ চাপের ১০০০০ গুণ পর্যন্ত জল-সমৃদ্ধ বায়ুমণ্ডল রয়েছে । সৌরজগতের উষ্ণতম গ্রহ শুক্রের সাথে গ্রহটির বেশ মিল রয়েছে । এদিকে আন্তর্জাতিক গবেষকদের একটি দল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীন সংস্থা ”জাতীয় বিমানচালনা ও মহাকাশ প্রশাসন” (NASA) এর James Webb Space Telescope (JWST) ব্যবহার করে ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে গ্রহটির তাপমাত্রা পরিমাপ করে । গ্রহের তাপীয় নির্গমনের উপর ভিত্তি করে এ পরিমাপ করা হয় । Mid-Infrared Instrument (MIRI) এর দ্বারা অবলোহিত আলো আকারে তাপ শক্তি সনাক্ত করে ।
কিন্তু বিস্ময়কর হচ্ছে যে, এ বার ঘোষিত পর্যবেক্ষণগুলো থেকে বোঝা যায়- গ্রহটির কোনো উল্লেখযোগ্য বায়ুমণ্ডল নেই । যার পৃষ্ঠের তাপমাত্রা প্রায় ৫০৩ কেলভিন (২৩০ °C বা ৪৪৬ °F) । উপরন্তু, বৃহস্পতির চাঁদ Io এর মতো জোয়ার-ভাটার কারণে গ্রহটি খুব ভূতাত্ত্বিকভাবে সক্রিয় হতে পারে, যা একই রকম কক্ষপথের সময়কাল এবং উত্কেন্দ্রতা বা কেন্দ্রীয় দূরত্বের সাথে ঘটে থাকে । গ্রহটির সম্ভাব্য বড় বায়ুমণ্ডল নিশ্চিত করতে আরো অধ্যয়ন বা গবেষণা করতে হবে । TRAPPIST-1b গ্রহ থেকে কোনো হিলিয়াম নির্গমন সনাক্ত করা যায়নি । এছাড়া, কার্বন ডাই অক্সাইড দ্বারা শোষিত হওয়ার (বায়ুমণ্ডলীয় শোষণ) কোনো লক্ষণও দেখা যায়নি, যা এ পরিমাপে স্পষ্ট হবে ।
তা সত্ত্বেও, TRAPPIST-1 নক্ষত্রের মতো ক্ষুদ্র সক্রিয় নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণকারী বহিঃসৌর গ্রহগুলো প্রাণের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজনীয় বায়ুমণ্ডল বজায় রাখতে পারে কি-না তা নির্ধারণে গবেষণার ফলাফলটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ চিহ্নিত করে । MIRI যন্ত্র ব্যবহার করে পরিমিত তাপসম্পন্ন বা নাতিশীতোষ্ণ বৈশিষ্ট্য, পৃথিবী আকৃতির বহিঃসৌর গ্রহগুলোকে চিহ্নিত করতে Webb দূরবীক্ষণ যন্ত্রটির ক্ষমতার বিষয়টিও ভালো পূর্বাভাস নির্দেশ করে । NASA এর Ames Research Center এর জ্যোতির্পদার্থবিদ এবং Nature সাময়িকীতে ২৭শে মার্চ ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত এ গবেষণার প্রধান লেখক Thomas Greene বলেন যে: ”এ পর্যবেক্ষণগুলো সত্যিই Webb এর মধ্য-অবলোহিত ক্ষমতার সদ্ব্যবহার করে ।
পূর্বের কোনো দূরবীক্ষণযন্ত্রগুলোতে এ জাতীয় অনুজ্জ্বল বা অস্পষ্ট মধ্য-অবলোহিত আলো পরিমাপ করার সংবেদনশীলতা ছিল না । আকাশগঙ্গায় সূর্যের মতো G নক্ষত্রের চেয়ে TRAPPIST-1 নক্ষত্রগুলোর মতো প্রায় দশ গুণ বেশি M নক্ষত্র আছে এবং সূর্যের মতো নক্ষত্রের তুলনায় তাদের দ্বিগুণ পাথুরে গ্রহ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে । কিন্তু তারা খুব সক্রিয়– তারা অল্প বয়সে খুবই উজ্জ্বল হয়, তারা দাউদাউ করিয়া জ্বলা অগ্নিশিখা এবং রঞ্জন-রশ্মি ছেড়ে দেয় যা একটি বায়ুমণ্ডলকে নিশ্চিহ্ন করতে পারে ।” French Alternative Energies and Atomic Energy Commission (CEA) এর সহ-লেখক Elsa Ducrot বলেন: ”ছোট, শীতল নক্ষত্রের চারপাশে পার্থিব গ্রহগুলো চিহ্নিত করা সহজ । কিন্তু আমরা যদি M নক্ষত্রের চারপাশে বসবাসযোগ্যতা বুঝতে চাই তাহলে TRAPPIST-1 এর গ্রহতন্ত্রটি একটি দুর্দান্ত পরীক্ষাগার ।
পাথুরে গ্রহে বায়ুমণ্ডল দেখার জন্য এগুলো আমাদের কাছে সেরা লক্ষ্য ।” Hubble Space Telescope এবং Spitzer Space Telescope দ্বারা TRAPPIST-1 b গ্রহের পূর্ববর্তী পর্যবেক্ষণগুলোতে এক স্ফীত বা দমকা বায়ুমণ্ডলের কোনো প্রমাণ খুঁজে পায়নি, তবে এর একটি ঘন বায়ুমণ্ডলের সম্ভাবনাও নাকচ করেনি । CEA এর আরেকজন জ্যেষ্ঠ জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানী ও সহ-লেখক Pierre-Olivier Lagage বলেন: “যদি গ্রহটিতে তাপ সঞ্চালন এবং পুনঃবন্টন করার জন্য বায়ুমণ্ডল না থাকে তবে দিনের দিকটি শীতল হবে । এ গ্রহটি সম্ভবত জোয়ারে তালাবদ্ধ, একপাশ সর্বদা মূল নক্ষত্রের দিকে মুখ করে এবং অন্যটি স্থায়ী অন্ধকারে থাকে ।” জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা মধ্য-অবলোহিত আলোর উজ্জ্বলতা পরিমাপ করতে Webb এর Mid-Infrared Instrument (MIRI) যন্ত্র ব্যবহার করেন । যখন গ্রহটি নক্ষত্রের পাশে থাকে, তখন নক্ষত্র ও গ্রহের দিনের বেলা উভয়ের দ্বারা নির্গত আলো দূরবীক্ষণ যন্ত্রে পৌঁছায় এবং তন্ত্র বা পদ্ধতিটি আরো উজ্জ্বল দেখায় ।
যখন গ্রহটি নক্ষত্রের পিছনে থাকে, তখন গ্রহ থেকে নির্গত আলো অবরুদ্ধ হয়ে যায় এবং শুধুমাত্র নক্ষত্রের আলো দূরবীক্ষণ যন্ত্রে পৌঁছায়, যার ফলে আপাত উজ্জ্বলতা হ্রাস পায় । গবেষক দলটি ‘মাধ্যমিক গ্রাস বা গ্রহণ আলোকমিতি’ (Secondary eclipse photometry) নামে একটি কৌশল ব্যবহার করে ৷ যেখানে এ গ্রহটি নক্ষত্রের পিছনে চলে যাওয়ার সাথে সাথে তন্ত্র বা পদ্ধতি থেকে উজ্জ্বলতার পরিবর্তন পরিমাপ করে MIRI যন্ত্রটি । যদিও TRAPPIST-1 b গ্রহ তার নিজের দৃশ্যমান আলো দিতে যথেষ্ট গরম নয়, তবে এর একটি অবলোহিত আভা রয়েছে । নক্ষত্র এবং গ্রহের একত্রিত উজ্জ্বলতা থেকে নক্ষত্রের নিজস্ব উজ্জ্বলতা (মাধ্যমিক গ্রাস বা গ্রহণের সময়) বিয়োগ করে তারা সফলভাবে গণনা করতে সক্ষম হয়েছেন যে, গ্রহটি কতোটা অবলোহিত আলো দিচ্ছে । পরবর্তীতে MIRI যন্ত্রটি দিনের তাপমাত্রা পরিমাপ করতে ব্যবহৃত হয় । লেখচিত্রটি MIRI যন্ত্রের F1500W ছাঁকনি ব্যবহার করে পাঁচটি পৃথক পর্যবেক্ষণ থেকে সম্মিলিত তথ্য দেখায়, যা শুধুমাত্র ১৩.৫-১৬.৬ মাইক্রন পর্যন্ত তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোকে আবিষ্কারক যন্ত্রে যেতে অনুমতি দেয় । নীল বর্গগুলো হচ্ছে স্বতন্ত্র উজ্জ্লতার পরিমাপ । লাল বৃত্তগুলো পরিমাপ দেখায় যা
“বাঁধা” (Binned) বা গড় করা হয় যাতে সময়ের সাথে পরিবর্তনটি দেখতে সহজ হয় ৷ মাধ্যমিক গ্রাস বা গ্রহণের সময় ০.১% এর কম উজ্জ্বলতা হ্রাস পায় । মানে, গ্রহের চেয়ে ১০০০ গুণ বেশি উজ্জ্বল নক্ষত্রের সাথে উজ্জ্বলতার পরিবর্তন ০.১% এর কম । MIRI যন্ত্রটি ০.০২৭% (৩৭০০ এর মধ্যে ১ অংশ) এর মতো ছোট পরিবর্তন সনাক্ত করতে সক্ষম হয় । Webb এর একটি মাধ্যমিক গ্রাস বা গ্রহন সনাক্তকরণের জন্য নিজেই একটি বড় মাইলফলক ।
এ গবেষণাটি Webb Guaranteed Time Observation (GTO) কর্মসূচী ১১৭৭ এর অংশ হিসেবে পরিচালিত হয়েছিল । এটি তাদের দেখতে অনুমতি দেয় যে, দিনের থেকে রাতের দিকে তাপমাত্রা কিভাবে পরিবর্তিত হয় এবং গ্রহের বায়ুমণ্ডল আছে কি-না তা নিশ্চিত করা । জ্যোতির্পদার্থবিদ Pierre-Olivier Lagage বলেন: “একটি লক্ষ্য ছিল যা আমি পাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলাম এবং ইহা এটি একটি । এ প্রথম আমরা একটি পাথুরে, নাতিশীতোষ্ণ বা পরিমিত তাপসম্পন্ন গ্রহ থেকে তাপ নির্গমন সনাক্ত করতে পেরেছি । বহিঃসৌর গ্রহ আবিষ্কারের গল্পে এটি সত্যিই একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ।” এটি আমাদের নিজস্ব সৌরজগতের বাইরে পৃথিবীর মতোই পাথুরে যেকোনো শীতল একটি বহিঃসৌর গ্রহের প্রথম তাপ নির্গমনের পর্যবেক্ষণ ।
তথ্যসূত্র: https://www.nasa.gov/ https://hubblesite.org/ https://en.wikipedia.org/ https://astronomical.fandom.com/wiki/Astronomy_Wiki https://www.space.com/ (By: Tereza Pultarova)
চিত্র: https://www.wikiwand.com/
মুহাম্মদ আস্রাফুল আলম (সোহেল)